ব্যাংকার

করোনার প্রাদুর্ভাব: ঝুঁকিতে যখন ব্যাংকার

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সবচেয়ে অপরিহার্য বিষয় মানুষদেরকে সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন করে বাধ্যতামূলক গৃহান্তরীণ রাখা। আজ থেকে দশ দিনের জন্য কার্যকরভাবে বাংলাদেশও গৃহান্তরীণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করলো। এ দশদিন সরকারীভাবে সাধারণ ছুটি। বাঙালী মনে ছুটি মানেই ছুটাছুটি। তাই সাধারণ ছুটিতে এমনিতে যে তারা ঘরে থাকতে চাইবেন না তা দেখা গেছে ছুটি ঘোষণার পর থেকে গতকাল পর্যন্ত।

২৬ তারিখের সরকারী ছুটির সাথে শুক্র ও শণি সাপ্তাহিক ছুটি এবং এরপর আরো সাতদিন। ছুটির মহানন্দে সবাই ছুটে চলেছেন গ্রামের বাড়িতে। অবস্থান পরিবর্তনের এ প্রবণতা ঠেকাতে শেষ পর্যন্ত সকল গণপরিবহন বন্ধ করতে হয়েছে। নাগরিকদের স্বেচ্ছা গৃহান্তরীণ ও সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী।

তবে এ সময়ে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার মতো সরকারের জরুরী সেবা বিভাগ খোলা রাখা হয়েছে। খোলা থাকছে ব্যাংকও। গত দু’দিন পূর্ণ দিবস খোলা ব্যাংকগুলোতে উপচেপড়া গ্রাহক উপস্থিতি ছিল। এখন এই সাধারণ ছুটিতেও ২৯ তারিখ থেকে দৈনিক সীমিত জনবল নিয়োগ করে দৈনিক দু’ঘন্টার জন্য জরুরী নগদ টাকার প্রয়োজন মেটাতে ব্যাংক খোলা রাখার নির্দেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। এই পরিস্থিতিকে ব্যাংকাররা নিজেদেরকে জন্য ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন নানা কারণে। যেমন-

০১) জনসমাগম:
আমাদের দেশে ব্যাংকিং মানেই ভীড়, ব্যাংকিং মানেই জনসমাগম। নিরাপদ ব্যক্তিক দূরত্ব বজার রাখা এই পরিবেশে শুধু কঠিন নয় অসম্ভবও। বাংলাদেশে প্রথাগত ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি ডিজিটাল প্রোডাক্টের বেশ উন্নয়ন ঘটলেও এ গুলোর ব্যবহার এখনো ব্যাপক নয়। ফলে জনসমাগম এবং ভীড় ঠেলাঠেলি না হলে যেন কারো কাছে ব্যাংকিংয়ের মজাটা হয় না। এমনকি এই করোনাসময়েও কারো মাঝে ভ্রুক্ষেপ নেই। অনেকে ব্যক্তিগত সিকিউরিট প্রটেকশন ছাড়াই ব্যাংকে আসছেন মানে ব্যাংকারের জন্য ঝুঁকিটাও সাথে আনছেন।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

০২) প্রবাসীদের আনাগোনা:
বিশ্বব্যাপী করোনার ডামাডোলের মাঝেই দেশে প্রবেশ করা লাখ লাখ প্রবাসী এখন সাধারণ জনস্রোতে মিশে গেছেন। এমনকি সদ্য বিদেশ ফেরতরা আছেন এই দলে। তারাও ব্যাংকে আসেন সেবা নিতে এবং সঙ্গত কারণেই ব্যাংকারদের কাছে ভিড়েন। এদের মাঝে করোনা বহনের ঝুঁকি আছে এমন লোকও যে নেই তার নিশ্চয়তা কোথায়? আর এই পরিবেশে ব্যাংকাররা ঝুঁকিমুক্ত থাকেন কীভাবে?

০৩) নগদ টাকা:
প্রচলিত কাগুজে মুদ্রা বা টাকা ছাড়া আমাদের জীবন অচল। এ টাকার অযত্ন ব্যবহারে আমাদের জুড়ি নেই। ফলে এমনিতেই টাকাগুলো আদর্শ জীবানু বাহকে পরিণত। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের এ সময়ে এইসব কাগজের টাকাগুলো জীবানুমুক্তকরণ ছাড়াই ব্যাংকারের হাত হয়ে সার্কুলেশন হওয়ায় ব্যাংকাররা এখানেও সরাসরি ঝুঁকিতে আছেন।

এ বিষয়গুলি মাথায় রেখে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার আলোকে প্রত্যেক ব্যাংক তাদের কর্মীদের জন্য পিপিই তথা হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ফেইস মাস্ক, এবং বডি এপ্রোন ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছে।

শাখা পর্যায়ে সাধ্যমত তা সংগ্রহ করে ব্যবহারের কিছু ছবি ফেসবুকে আসছে প্রদর্শনীর জন্য নয়, স‌চেতনতা বাড়াতে। যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাজারে পাওয়া মাস্ক, এপ্রোন ও ক্যাপগুলো সেই কাঙ্খিত মানের নয় যে, ওগুলো ভাইরাস প্রতিরোধে সক্ষম কিংবা সহায়ক হতে পারে। এরই মাঝে ব্যাপারটি নিয়ে আবার কারো কারো মাথা ব্যাথা আরে, ডাক্তারের পিপিই ব্যাংকাররা পরবে কেন?

কার্টেসিঃ মোসলেহ উদ্দিন, ম্যানেজার, আইবিবিএল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button