ব্যাংকার

ব্যাংকাররা দেশের উন্নয়নে অবদান রেখে চলেছেন

আজ একজনের কথায় খুব কষ্ট লাগছে, সে বলছে একজন ব্যাংকার দেশের জন্য কি করে? শুধু অংক গিলে ব্যাংকে ঢুকেছে, যারা বিসিএস এ আছে তারাই দেশ চালায়। উল্লেখ্য সে বিসিএস ক্যাডার, কোন মানের তা তো বুঝতেই পারছেন।

আমার কাছে সকল পেশাই সমান এবং সেই উৎকৃষ্ট যে তার পেশাদারিত্ব নিয়ে সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে। সে মেহনতী মানুষ হোক কিংবা শ্রমজীবি হোক, ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হোক, অন্যান্য সরকারি চাকুরি অথবা বেসরকারি চাকরিজীবী হোক সকল মানুষেরই কাজের যোগ্যতা রয়েছে এবং তারা নিজ নিজ কাজে দক্ষতা এবং পেশাগতভাবে বিবেচনায় সকলেই সম্মান পাওয়ার যোগ্য। কেউ তো আর অবৈধ কাজ করছে না।

এই সব বিসিএস ক্যাডাররা এতোই অহংকারী যে, তারা অন্য কোন পেশাকে সম্মান করতে জানে না। এরা ম্যাজিস্ট্রেট হয়ে বাবার বয়সী লোকদের কান ধরে উঠ বস করায় এবং সেই ছবি নিজের মোবাইলে ধারণ করে নিজেকে খুব করিৎকর্মা ভাবে। অথচ এইসব মেহনতী মানুষের অর্থে তাদের বেতন হয় এবং তার বাবা হয়তো কৃষক দিনমজুর অথবা এরকম নিম্ন মধ্যবিত্ত একজন মানুষ, যে তার সারা জীবন পরিশ্রম করে তাদের সন্তানকে মানুষ করতে গিয়ে বিসিএস ক্যাডারের নামে অমানুষ করে ফেলে। শত ধিক্কার জানাই তাদের।

ব্যাংকারদের সমাজে কোন মূল্যায়ন নাই এই কথা অহংকারী বিসিএস ক্যাডার মনে করতে পারে কিন্তু আমরা সুশিক্ষিত মানুষেরা মনে করি না। এরা দেশের জন্য নিজেকে উজাড় করে দেয় এদের ছুটি বলতে কিছুই নেই।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

আমার যেদিন দ্বিতীয় সন্তান হয় সেইদিনও আমি ছুটি পাইনি। তারপর তিন থেকে চারদিন আমাকে এত ব্যস্ত থাকতে হয়েছে যে, আমার সন্তানকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসবো সেই সময়টুকু দিতে ম্যানেজমেন্ট আমাকে দিধা করেছে। নিজের কর্তব্যের কারণে না বলার মতন কোনো পরিস্থিতি আসলে ছিল না। তাই বলে কি আমার পরিবারের প্রতি আমার কোনো দায়িত্ব নেই।

আমার তো উচিত ছিল এই সময়টা অন্তত পরিবারের কাছে থাকা। কিন্তু আমি থাকতে পারিনি। এছাড়াও আরও অনেক রকম অসুবিধার সম্মুখীন আমাদের হতে হয়। যেমন- আমি দেড় বছরে চারবার বদলি হয়েছি তিন জেলায়। যা সত্যিই অনেক বেদনাদায়ক তারপরেও নিজের অসহায়ত্বকে মেনে নিয়ে চাকুরী করতে হচ্ছে। অথচ কিছু কিছু বিসিএস ক্যাডারের অনেক ছুটি থাকে এবং অফিস করে তারা অনেক অল্প সময়। আমরা সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত অফিস করি।

এ তো বললাম আমাদের কষ্টের কথা। আমরা সমাজে যে অবদান রাখি তা নিম্নে তুলে ধরা হলো-
১. দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অবদান;
১. সামাজিক বেষ্টনীর আওতায় বয়স্ক/ বিধবা/ প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদান/ বিদ্যুৎ বিল গ্রহণ;
৩. দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ঋণ প্রদান;
৪. বৃহৎ প্রতিষ্ঠানে ঋণ প্রদান;
৫. এজেন্ট হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন প্রদান;
৬. আমানত সংগ্রহ ও সংরক্ষণ।

আমি দেখেছি একজন ব্যবসায়ী মাত্র ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে দশ বছরে কোটি টাকার মালিক হয়েছে চালের ব্যবসা করে সে। কেউ যদি কঠোর পরিশ্রম করে ব্যাংক তার পাশে থাকে এবং সে ক্ষেত্রে সে তার প্রতিভাকে বিকশিত করতে পারে। কেউ চাকরি না করে উদ্যোক্তা হতে পারে এবং এই জন্য ব্যাংক তাকে সাহায্য করে। এমনও এক সময় আসে সেই উদ্যোক্তার অধীনেই শত শত কর্মী বাহিনী চাকরি করে।

আমরা কতটা বিশ্বস্ত যে, ১ জন রিক্সাওয়ালার জমানো ১০টি টাকা আমাদের ভোল্টে থাকে আবার কোটিপতির শতকোটি টাকাও আমাদের কাছে সুরক্ষিত থাকে।

অথচ সমাজে কেন ব্যাংকাররা মূল্যায়িত হয় না? তার অনেক কারণ আছে। যেমন-
প্রথমত তারা ছুটি পায় না।
দ্বিতীয়তঃ তারা অনেক পরিশ্রম করে।
তৃতীয়তঃ তারা অনেক সময় দেয়।
এরপরেও সমাজের কিছু আবাল মার্কা বিসিএস ক্যাডাররা নিজেদেরকে সুশিক্ষিত মনে করে। অথচ তারা অহংকারী এবং অন্য পেশাকে সম্মান দিতে জানেনা শত ধিক্কার তাদের।

যারা বিসিএস ক্যাডার তারা অবশ্যই আমাদের চাইতে মেধাবী, কিন্তু কোন পেশাকেই আপনারা ছোট করে দেখবেন না। আর যদি মানবতার পেশা দেখেন অথবা পরিশ্রমী হিসেবে কর্মদক্ষতাকে বিবেচনা করেন তাহলে তা একমাত্র ব্যাংককারই।

কার্টেসিঃ মাহাদি আলম সজিব

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button