ব্যাংকার

করোনায় সম্মুখ যুদ্ধে ব‍্যাংকাররা

কভিড-১৯ বা করোনা মহামারি ঠেকাতে সরকার ২৬ মার্চ ২০২০ বৃহস্পতিবার থেকে সারা দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষনা করে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়সহ সরকারি আধা-সরকারি সমস্ত প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে সকলকে ঘরে থেকে করোনা যুদ্ধে জয়ী হতে সরকারকে সহযোগিতা করার অনুরোধ করে। এই তালিকায় অন‍্য সকলের মতো ব‍্যাংকের ছুটি হলো না। ব‍্যাংকের ছুটি দেয়া না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার সকল ব‍্যাংকের অভিভাবক বাংলাদেশ ব‍্যাংকের।

বাংলাদেশ ব‍্যাংক দেশের মানুষের প্রয়োজনের কথা চিন্তা করে আলাদা সার্কুলার জারি করে বলে দিল বাংলাদেশের সকল তফসিলি ব‍্যাংক সীমিত পরিসরে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে স্বাস্থ‍্যবিধি মেনে চালু রাখতে হবে। এই সার্কুলারের বরাতে সকল ব‍্যাংক তাদের নিজস্ব এখতিয়ারে প্রয়োজন অনুযায়ী সীমিত পরিসরে সীমিত সংখ্যক শাখা ও হেড অফিসের বিভাগগুলো খোলা রেখে ইনস্ট্রাকশন সার্কুলার জারি করে। কোন ব‍্যাংকারের সাধ‍্য নাই এই নির্দেশনা অমান‍্য করার।

তাই করোনা মহামারি আর মারামারি যাই হোক না কেন কর্মকর্তা কর্মচারিদের অফিসে হাজির হতেই হয়েছে। প্রথম দিকে তেমন কোন স্বাস্থ‍্য সুরক্ষার ব‍্যবস্থা ছিলনা কর্মকর্তা কর্মচারিদের। কেবলমাত্র মাস্ক পড়েই দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে তাদের। এমনকি সামাজিক দুরত্ব ও মানা যায়নি অনেক ক্ষেত্রে। গ্রাহকদের চাপে স্বাস্থ‍্যবিধি মানতে পারেনি অনেক ব‍্যাংক। গ্রাহকরাও অনেকেই বুঝে হউক না বুঝে হউক স্বাস্থ‍্যবিধি মানার চেষ্টাও ছিল না। তারা তাদের মতো সেবা পেতে অস্থির থাকত। ‘Customer is our king’ এই নীতিতে ব‍্যাংকারও সেবা দিতে থাকল। যদিও পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব‍্যাংক কর্মীদের স্বাস্থ‍্য সুরক্ষা ও স্বাস্থ‍্যবিধি মানার জন‍্য বেশ কঠোরতার সাথে কয়েকটা সার্কুলার জারি করল।

ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশ (Banking News Bangladesh. A Platform for Bankers Community.) প্রিয় পাঠকঃ ব্যাংকিং বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলো নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশ এ লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন।

সমস্ত অফিস আদালত স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ মাঠে শুধু পুলিশ ডাক্তার সাংবাদিক জেলা ও উপজেলা ভিত্তিক প্রশাসনের কর্মকর্তা আর ব‍্যাংকাররা থাকল। ডাক্তার, পুলিশ, আর্মি প্রশাসনের কর্মকর্তা আর সাংবাদিকরা জড়িত থাকল প্রত‍্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মানুষের জীবন বাঁচানোর যুদ্ধে আর ব‍্যাংকাররা থাকল এদের রসদ জুগিয়ে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা রাখার যুদ্ধে সরাসরি। ব‍্যাংকাররা যুদ্ধ করছে বন্দুক, কামান, গোলাবারুদ ছাড়া মানে প্রয়োজনীয় ও পর্যাপ্ত স্বাস্থ‍্য সরঞ্জাম ছাড়া। কত ভয়ে ভয়ে অফিস করেছি এমনকি এখনও করছি।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প‍্যাকেজ বাংলাদেশ ব‍্যাংক পলিসি করে বানিজ‍্যিক ব‍্যাংকগুলোকে দিয়েছে বাস্তবায়নের জন‍্য। ব‍্যাংক কর্তৃপক্ষ সীমিত সংখ্যক অফিসার দিয়ে রোস্টারিং ডিউটির মাধ‍্যমে রাতদিন পরিশ্রম করে প‍্যাকেজগুলো বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। সাথে বাংলাদেশ ব‍্যাংকের কর্মকর্তারাও সার্বক্ষণিক সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে। এই করোনা মহামারিতে যেখানে সবাইকে ঘরে থেকে নিরাপদে থাকতে বলা হচ্ছে, যার শ্লোগান হচ্ছে ‘ঘরে থাকুন নিরাপদে থাকুন পরিবার ও দেশকে ভাল রাখুন’ ‘Stay home, be safe’। সেখানে ব‍্যাংকারা পরিবারের সকল সদস‍্যকে উৎকণ্ঠায় রেখে ঘর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে দেশের ও দেশের মানুষের কথা ভেবে। মানুষকে আর্থিক সেবা দিতে, দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে।

ভাবুনতো, যদি দেশের সবগুলো ব‍্যাংক এই দুই মাস বন্ধ থাকত কি হতো দেশের অর্থনৈতিক সচলতার অবস্থা। কি হইত মানুষের পকেটের অবস্থা। শিশু খাদ‍্য আমদানিতে জরুরী ব‍্যবস্থা গ্রহন করতে হয়েছে এই Corona Pandemic অবস্থায়। শ্রমিকদের বেতন ভাতা প্রদান করেছে মোবাইল ফিন‍্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ‍‍্যমে দিনরাত পরিশ্রম করে ব‍্যাংকাররা। বৃহ‍ৎ শিল্প ও সেবা খাতে এবং ক্ষুদ্র কুটির মাঝারি ও এসএমই খাতে ঘোষিত প্রণোদনা প‍্যাকেজগুলো বিতরণের মাধ‍্যমে দেশের পরন্ত অর্থনীতি সচল ও চাঙ্গা করতে ব‍্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ থেকে শুরু করে সর্বস্তরের কর্মকর্তাই দম ফেলানোর সময় পাচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রীর এই প‍্যাকেজ ঠিকমত বাস্তবায়িত না হলে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভবনা কমে যাবে। তাই সকল অফিসারই করোনার ভয় ভূলে গিয়ে কাজ করে যাচ্ছে দেশের জন‍্য।

এরই মাঝে অফিসে আসা যাওয়ার পথে কত ব‍্যাংকার পুলিশের চেকিং পয়েন্টে নাজেহাল হয়েছে। ব‍্যাংকাররা কিন্তু থেমে থাকেনি। ভয় পায়নি। সাহসের সাথে কাজ করে যাচ্ছে দেশের জন‍্য। এই পর্যন্ত একজন ব‍্যাংকার ও দায়িত্ব থেকে পিছপা হয়নি। যদিও ইতোমধ‍্যে অনেক ব‍্যাংকার দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে করোনায় আক্রান্ত হয়ে জীবন উৎস্বর্গ করে দিয়েছে দেশের তরে। এখন ও শত শত কর্মকর্তা কর্মচারী আক্রান্ত হয়ে যুদ্ধ করছে করোনার সাথে বেঁচে থাকার জন‍্য এবং আক্রান্তের সংখ‍্যা তো বেড়েই চলছে। আমার খুব কাছের একজন আজকে কতদিন আক্রান্ত হয়ে লড়ে যাচ্ছে করোনার সাথে। অনেক সহকর্মী আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।

সেদিন শুনলাম ইসলামী ব‍্যাংকের অবস্থা অনেক খারাপ, কয়েকজন মৃত‍্যুবরণ করেছেন। সোনালী ব‍্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তাও ইতোমধ‍্যে ইন্তেকাল করেছেন। শুনেছি বাংলাদেশ ব‍্যাংকের অনেক কর্মকর্তা আক্রান্ত হয়েছে। সিটি ব‍্যাংকের এক কর্মর্কতা সর্বপ্রথম ইন্তেকাল করেছেন। ব‍্যাংকারের মৃত‍্যুর মিছিলে সংখ‍্যা দিনে দিনে বেড়েই চলছে। ভয়াবহ কষ্টের হলো আমরা কেউ কাউকে কোন রকম সাহায‍্য সহযোগিতা করতে পারছি না যত কাছেরই হোক আর যত ইচ্ছাই থাকুক না কেন মনে। শুধু আল্লাহর কাছে দোয়া করছি।

শ্রদ্ধেয় গভর্নর স‍্যারসহ বাংলাদেশ ব‍্যাংকের কর্মকর্তারা ও সারাক্ষণ কাজ করে যাচ্ছে এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মাঝে দেশকে ভালো রাখার জন‍্য। সরকারী সিদ্ধান্তগুলো পলিসি আকারে তৈরী করে ব‍্যাংকগুলোকে যথাযথ নির্দেশনা প্রদান করে বাস্তবায়নে সাহায্য সহযোগিতা করে যাচ্ছে নিয়মিত। বিআরপিডি, সিআইবি, অফসাইট সুপারভিশন, ফরেন এক্সচেঞ্জ পলিসি, মনিটরি পলিসি ইত‍্যাদি বিভাগগুলো সারাক্ষণ কাজ করে যাচ্ছে দেশের অর্থনীতি সচল রাখার জন‍্য।

বানিজ‍্যিক ব‍্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদও দ্রুততার সহিত কাজ করে যাচ্ছে সরকার ও বাংলাদেশ ব‍্যাংকের সাথে সমন্বয় করে দেশের অর্থনীতি টেনে তুলতে। এই কারনে বিভিন্ন ব‍্যাংকের পরিচালক মহোদয়রা অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। আমাদের শ্রদ্ধেয় ভাইস চেয়ারম্যান‍ স‍্যার বেশ কয়েক দিন ধরে করোনার সাথে লড়াই করে যাচ্ছে হসপিটালের বেডে। আল্লাহ স‍্যারকে সহ সবাইকে দ্রুত সুস্থ করে দেন আমিন।

দীর্ঘ ৬৬ দিন সাধারণ ছুটি শেষে ৩১ মে, ২০২০ অফিস খোলার পরে যেমনি বেড়েছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত‍্যুর হার তেমনি বেড়েছে ব‍্যাংকারদের কাজের চাপ। ব‍্যাংকাররা কাজ করেই চলছে। অনেক পেশায় দেখতেছি বিশেষ করে চিকিৎসা পেশায় অনেকেই করোনার কারনে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছে না। সাধারণ চিকিৎসা সেবা থেকেও অনেক মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে। কিন্তু এই মহামারিতে ব‍্যাংকিং সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে এমন কোন নজির নাই। যার যখন যেমন সেবা প্রয়োজন সব যৌক্তিক ফিন‍্যান্সিয়াল সেবাই গ্রাহক পেয়ে যাচ্ছে ব‍্যাংকার থেকে।

বাংলাদেশ ব‍্যাংক আজকে একটি সার্কুলার জারি করেছে দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে ব‍্যাংকারের ভূমিকা অনস্বীকার্য বলে। সকল ব‍্যাংকারদের অন্তর্ভূক্ত করে প‍্রণোদনা প‍্যাকেজগুলো বাস্তবায়ন করে অর্থনীতি চাঙ্গা করতে। ইতোমধ‍্যে ব‍্যাংকারদের বেতন কমানোর জন‍্য বিএবিসহ এক দুইটা ব‍্যাংক উঠে পরে লাগছিল। সিটি ব‍্যাংক অগ্রগামী ছিল। এসবিএসি ব‍্যাংকের এমডি ও মার্কেন্টাইল ব‍্যাংকের এমডি স‍্যার এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে বেতন না কমানোর ঘোষনা দেওয়ায় আরো বেশ কিছু ব‍্যাংক বেতন না কমানোর পক্ষে অবস্থান নেয়। এক্ষেত্রে প্রাইম ব‍্যাংকের নবনির্বাচিত সবচেয়ে কম বয়সী চেয়ারম‍্যান বেতন না কমানোর পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন কর্মকর্তা কর্মচারীরা আমাদের পরিবারেরই অংশ। বাংলাদেশ ব‍্যাংকও ব‍্যাংকারদের বেতন ভাতা না কমিয়ে উজ্জীবিত রাখার উদ্যোগ নিতে নির্দেশনা দিয়ে সার্কুলার জারি করেছে গত বৃহস্পতিবার।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে কর্মী সন্তুষ্ট থাকলে প্রতিষ্ঠানের সাফল‍্য বাড়ে। কর্মীদের মন ভাল থাকলে কাজের গতি ও মান উভয় বাড়ে ফলে প্রতিষ্ঠানের মুনাফাও বাড়ে। বাংলাদেশ সরকার এই অর্থনৈতিক মন্দার মধ‍্যেও বহু সচিব পদে পদায়ন করেছে। পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন পদেও পদায়ন করছে। ডাক্তারদের জন‍্য রিওয়ার্ড ঘোষনা করেছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এশিয়ান পেইন্টস ও বসুন্ধরা গ্রুপ ইতোমধ‍্যে বেতন ভাতা বাড়িয়ে দিয়েছে কর্মীদের মনোবল বৃদ্ধির জন‍্য।

আর ব‍্যাংকিং এতো বড় একটা কর্পোরেট সেক্টর হয়েও এই মহামারিতে ধৈর্য‍্য না ধরে বেতন-ভাতা কমিয়ে আভ্যন্তরীণ শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলোতে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দেশে-বিদেশে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্টের উপক্রম হচ্ছে। যাদের দিয়ে ব‍্যবস‍া হয় তাদের বেতন কমিয়ে ব‍্যবসা বাড়ানোর পলিসি কোন দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ব‍্যবস্থাপনার হওয়া উচিত নয়। পশ্চিমা দেশের কথা অনেকে বলবেন যে সমস‍্যায় তারা শত শত কর্মী ছাঁটাই করে। তাদের অর্থনীতি আমাদের অর্থনীতি একরকম নয়। তারা ইউনিট ব‍্যাংকিং করে। চাইলে ব‍্যাংকই বন্ধ করে দেয়। আমরা তো চাইলেই তা পারি না।

আমার এক শ্রদ্ধেয় স‍্যার সিনিয়র ব‍্যাংকার, তার একটি লেখায় বলেছেন “বেতন ভাতা লোকবল কমিয়ে সাময়িক দূর্যোগ মোকাবেলা করার চিন্তার মধ্যে কোনো মুনশিয়ানা নাই। বরং দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনায় অন্যান্য ব্যবসায়িক কৌশলে এটি‌ মোকাবেলা করাই‌ একটি প্রতিষ্ঠানের পেশাদারিত্ব”। স‍্যার যর্থাথই বলেছেন। বেতন-ভাতা না কমিয়ে ব‍্যবসায়িক কৌশল পরিবর্তন করতে হবে। বেতন-ভাতা কমিয়ে দেশের এতোগুলো উচ্চ শিক্ষিত পরিবারকে অস্থির চিন্তার মধ‍্যে ফেলে দিয়ে তেমন কোন লাভ হবে বলে মনে হচ্ছে না।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মিজানুর রহমান স‍্যার সংকটে মার্কেটিং লেখায় বলেছেন, করোনা পরিস্থিতি ও পরবর্তীতে (Now normal & new normal) বানর মার্কেটিং পদ্ধতি ব‍্যবহার করে ব‍্যবসা করতে। বানর যেমন এক জায়গায় বসে খায় না, খাবার নিয়ে একটু ঘুরে ঘুরে বা জায়গা পরিবর্তন করে খায় আমাদেরও তেমনি ব‍্যবসার ক্ষেত্রে সেই রকম Agile কিছু করতে হবে।

তবে আমি বুঝি ব‍্যবসায় বুম-রিসিশন (Boom-Recession) বা উৎথান পতন থাকবেই। এই জন‍্যই আল্লাহ ব‍্যবসাকে হালাল করেছে। এতে এতো
ধৈর্য‍্য হারা হলে চলবেনা। এতো বছর মুনাফা হয়েছে এ বছর না হয় মুনাফা কম হবে। কর্মকর্তা কর্মচারী ছাঁটাই না করে বেতন ভাতা না কমিয়ে ধৈর্য‍্য ধরে নতুন নতুন পলিসি গ্রহন করলে দুই এক বছরের মধ‍্যেই ব‍্যবসা ঘুরে দাঁড়াবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ ধৈর্য‍্যশীলদের পছন্দ করেন।

দেশের অর্থনীতিতে ব‍্যাংকারদের অবদান অনেক। ব‍্যাংকাররা যেমন লোন আকারে টাকা দিয়ে ব‍্যবসায়িদের ব‍্যবসা সম্প্রসারনে সহযোগিতা করে থাকে তেমনি তাদের থেকে বহু কষ্টে টাকা ফেরত এনেও আবার অর্থনীতিতে অবদান রাখে। মানুষের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় ও প্রয়োজন অতিরিক্ত অর্থগুলো (Surplus Money) ব‍্যাংকিং চ‍্যানেলে প্রবেশ করিয়েও অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। বহির্বানিজ‍্যে ও বৈদেশিক রেমিট্যান্স সংগ্রহেও ব‍্যাংকারের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এই যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা প‍্যাকেজগুলো যত কষ্টে বিতরন করলাম তার চেয়ে আরো বেশী কষ্ট করে টাকাগুলো ফেরত আনতে হবে আমাদেরই। তাই ব‍্যাংকারদের বেতন ভাতা না কমিয়ে প‍্রাপ‍্য প্রমোশন, বোনাস ইত‍্যাদি দিয়ে দিলে ব‍্যাংকের মুনাফা বাড়বে বৈ কমবে না।

সর্বোপরি বলতে চাই মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয়ের পরে মুক্তিযোদ্ধারা যেমন পুরষ্কৃত হয়েছে করোনা যুদ্ধেও অন‍্যান‍্যদের সহ সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসাবে ব‍্যাংকাদেরকে দূর্যোগকালীন পারফরম্যান্স রিওয়ার্ডের ব‍্যবস্থা গ্রহন করলে সকল পেশার কর্মকর্তা কর্মচারিদের মাঝে দূর্যোগ মোকাবেলাসহ সকল সময়ে কর্মস্পৃহা বহুগুন বেড়ে যাবে যার ফল ভোগ করবে প্রতিষ্ঠান ও দেশ উভয়ই।

লেখকঃ তালুকদার মোঃ ফারুক আহম্মেদ
ভাইস প্রেসিডেন্ট
মার্কেন্টাইল ব‍্যাংক লিমিটেড
হেড অফিস, ঢাকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button