বাংলাদেশ ব্যাংক

বাংলাদেশ সরকার ট্রেজারি বন্ড ও ট্রেজারি বন্ডের বৈশিষ্ট্যসমূহ

ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশঃ স্বাধীনতা লাভের পর বাংলাদেশ সরকার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানসমূহের হাতে থাকা পাকিস্তান সরকারের আয়কর ও প্রতিরক্ষা বন্ডসমূহের দায়-দায়িত্ব গ্রহণ করে সেগুলিকে বাংলাদেশ সরকারের বন্ড হিসেবে নতুনভাবে ইস্যু করে। এতদ্ব্যতীত রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের শেয়ারহোল্ডারগণের অনুকূলেও সরকার ৫% অহস্তান্তরযোগ্য বন্ড ইস্যু করে। অপরদিকে স্বাধীনতা-উত্তরকালে অচল ঘোষিত ১০০ টাকার নোটসমূহের মূল্য পরিশোধের জন্য অর্থসংস্থানের লক্ষ্যে সরকার ১৯৭৪ সালে সঞ্চয় বন্ড চালু করে। এ সকল সঞ্চয় বন্ডের অধিকাংশ বাংলাদেশ ব্যাংক ক্রয় ও ধারণ করে।

দেশের উন্নয়ন ব্যয়ের অর্থসংস্থানের জন্য বাংলাদেশ সরকার সর্বপ্রথম ১৯৮১ সালে ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড চালু করে ও বিদেশে কার্যরত বাংলাদেশিদের নিকট সেগুলি বিক্রয়ে উদ্যোগী হয়। পরবর্তীকালে ব্যক্তিবিশেষ, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংকগুলির নিকট বিক্রয়ের জন্য সরকার ১৯৮৪ সালের জানুয়ারি মাসে দুই বছর মেয়াদি বিশেষ ট্রেজারি বন্ড এবং অব্যাংকিং বিনিয়োগকারীদের নিকট বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ১৯৮৫ সালের ডিসেম্বর মাসে জাতীয় বিনিয়োগ বন্ড নামে অপর একটি বন্ড চালু করে।

• Treasury Bond বা ট্রেজারি বন্ড
ট্রেজারি বন্ড হল একটি দীর্ঘ মেয়াদী (২-২০ বছর মেয়াদি) ক্যাপিটাল মার্কেট প্রোডাক্ট। সরকার এটি ইস্যু করে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নিলামের মাধ্যমে কেনা-বেচা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের যেকোনো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান এর নিলামে অংশ নিতে পারে।

তবে উল্লেখ্য যে, কোন প্রতিষ্ঠানের শাখা পর্যায়ে ট্রেজারি বন্ড ক্রয়-বিক্রয় করতে পারেনা। শুধুমাত্র প্রধান কার্যালয়ের ট্রেজারি বিভাগ থেকে এটি ক্রয়-বিক্রয় করা যায়।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

বর্তমানে আমাদের দেশে ৫ (পাঁচ) ধরণের ট্রেজারি বন্ড প্রচলিত আছে। এগুলো হলঃ
১) ২ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ড
২) ৫ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ড
৩) ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ড
৪) ১৫ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ড
৫) ২০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ড

• ট্রেজারি বন্ডের বৈশিষ্ট্য
নিম্নে ট্রেজারি বন্ডের বৈশিষ্ট্যসমূহ তুলে ধরা হলো-
– স্বল্পমেয়াদী (অনধিক এক বছর) সরকারি সিকিউরিটিজ।
– প্রতি ৬ মাস পর পর নির্ধারিত হারে মুনাফা এবং মেয়াদ শেষে মূল টাকা ফেরত পাওয়া যায়।
– ট্রেজারি বন্ডের সুদের হার নিলামের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়।
– ট্রেজারি বন্ড সেকেন্ডারি মার্কেটে ক্রয়-বিক্রয় যোগ্য।

• ট্রেজারি বন্ড ক্রয়ের যোগ্যতা
নিম্নে ট্রেজারি বন্ড ক্রয়ের যোগ্যতাসমূহ তুলে ধরা হলো-
বাংলাদেশী কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যেমন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান বীমা কোম্পানি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান এবং ভবিষ্যৎ তহবিল হতে হবে ইত্যাদি রক্ষণাবেক্ষণকারী কর্তৃপক্ষ। এছাড়া অনিবাসী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাদের নামে পরিচালিত বৈদেশিক মুদ্রা হিসাবের স্থিতি হতে ট্রেজারি বন্ড ক্রয় করতে পারবে। আসল এবং মুনাফা বিদেশে প্রত্যার্পণযোগ্য।

• Treasury বন্ড ক্রয়ের পদ্ধতি
নিম্নে ট্রেজারি বন্ড ক্রয়ের পদ্ধতি তুলে ধরা হলো-
প্রাইমারি মার্কেটঃ প্রতি সপ্তাহে অনুষ্ঠিত নিলাম হতে প্রাইমারি ডিলারদের মাধ্যমে ক্রয় করা যায়।
সেকেন্ডারি মার্কেটঃ যে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে যেকোনো সময় ক্রয় করা যায়।

বর্তমান অর্থনীতিতে তারল্যের আধিক্যের কারণে ট্রেজারি বন্ডের হার খুবই কম। এই হার ৫% থেকে ৯% এর মধ্যে উঠানামা করে।

সূত্রঃ বাংলাদেশ ব্যাংক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button