বাংলাদেশ ব্যাংক

ম্যানুফেকচারিং ও সেবা খাতের কুটির, মাইক্রো এবং ক্ষুদ্র উদ্যোগের সংজ্ঞা ও ঋণসীমা নির্ধারণ

ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশঃ ০৭ জানুয়ারী ২০১৬ তারিখে জারীকৃত এসএমইএসপিডি সার্কুলার নং-০১ এর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাচ্ছে। বর্ণিত সার্কুলারের মাধ্যমে জারীকৃত কটেজ, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের/ উদ্যোগের সংজ্ঞা সংশোধনপূর্বক গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় শিল্পনীতি ২০১৬ এ প্রদত্ত শিল্প ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংজ্ঞার আলোকে বাংলাদেশে কার্যরত সকল ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনুসরণের জন্য ম্যানুফেকচারিং ও সেবা খাতের কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং ট্রেডিং খাতের মাইক্রো ও ক্ষুদ্র উদ্যোগ এর সংজ্ঞা এবং সর্বোচ্চ ঋণসীমা নিম্নবর্ণিতভাবে পুনঃনির্ধারণ করা হলঃ

ক. ম্যানুফেকচারিং ও সেবা খাতঃ
১.০. কুটির শিল্প (Cottage Industry):

১.১. ‘কুটির শিল্প’ বলতে পরিবারের সদস্যদের প্রাধান্যভুক্ত সেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে যেসব প্রতিষ্ঠানে জমি এবং কারখানা ভবন ব্যতীত সঞ্চয়ী সম্পদের মূল্য প্রতিস্থাপন ব্যয়সহ ১০ লক্ষ টাকার নীচে এবং যা পারিবারিক সদস্যসহ অন্যান্য সদস্য সমন্বয়ে গঠিত এবং সর্বোচ্চ জনবল ১৫ এর অধিক নয়।

১.২. কোন একটি মানদন্ডের ভিত্তিতে একটি কর্মকান্ড কুটির শিল্পের অন্তর্ভূক্ত হলেও অন্য মানদন্ডে সেটি মাইক্রো শিল্পের অন্তর্ভূক্ত হতে পারে । সেক্ষেত্রে এ কর্মকান্ডটি মাইক্রো শিল্পের অন্তর্ভূক্ত বলে বিবেচিত হবে।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

১.৩. কুটির শিল্প খাতের একজন গ্রাহককে সর্বোচ্চ ১০ (দশ) লক্ষ টাকা ঋণ প্রদান করা যাবে।

২.০. মাইক্রো শিল্প (Micro Industry):

২.১. ম্যানুফেকচারিংয়ের ক্ষেত্রে ‘মাইক্রো শিল্প’ বলতে সেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে যেসব প্রতিষ্ঠানে জমি এবং কারখানা ভবন ব্যতিরেকে স্থায়ী সম্পদের মূল্য প্রতিস্থাপন ব্যয়সহ ১০ লক্ষ টাকা থেকে ৭৫ লক্ষ টাকা কিংবা যেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানে ১৬-৩০ জন বা তার চেয়ে কম সংখ্যক শ্রমিক কাজ করে।

২.২. সেবা শিল্পের ক্ষেত্রে ‘মাইক্রো শিল্প’ বলতে সেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে যেসব প্রতিষ্ঠানে জমি এবং কারখানা ভবন ব্যতিরেকে স্থায়ী সম্পদের মূল্য প্রতিস্থাপন ব্যয়সহ ১০ লক্ষ টাকার নীচে কিংবা যেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ ১৫ জন শ্রমিক কাজ করে।

২.৩. কোন একটি মানদন্ডের ভিত্তিতে একটি কর্মকান্ড মাইক্রো শিল্পের অন্তর্ভুক্ত হলেও অন্য মানদন্ডে সেটি ক্ষুদ্র শিল্পের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে । সেক্ষেত্রে এ কর্মকান্ডটি ক্ষুদ্র শিল্পের অন্তর্ভুক্ত বলে বিবেচিত হবে। তবে তৈরী পোশাক প্রতিষ্ঠান/ শ্রমঘন শিল্পের ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য হবে না।

২.৪ ম্যানুফ্যাকচারিং খাতভুক্ত মাইক্রো শিল্পের একজন গ্রাহককে সর্বোচ্চ ১ (এক) কোটি টাকা এবং সেবা খাতভুক্ত মাইক্রো শিল্পের একজন গ্রাহককে সর্বোচ্চ ২৫ (পঁচিশ) লক্ষ টাকা ঋণ প্রদান করা যাবে।

৩.০. ক্ষুদ্র শিল্প (Small Industry):

৩.১. ম্যানুফেকচারিংয়ের ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র শিল্প’ বলতে সেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে যেসব প্রতিষ্ঠানে জমি এবং কারখানা ভবন ব্যতিরেকে স্থায়ী সম্পদের মূল্য প্রতিস্থাপন ব্যয়সহ ৭৫ লক্ষ টাকা থেকে ১৫ কোটি টাকা কিংবা যেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানে ৩১-১২০ জন শ্রমিক কাজ করে।

৩.২. সেবা শিল্পের ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র শিল্প’ বলতে সেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে যেসব প্রতিষ্ঠানে জমি এবং কারখানা ভবন ব্যতিরেকে স্থায়ী সম্পদের মূল্য প্রতিস্থাপন ব্যয়সহ ১০ লক্ষ টাকা থেকে ২ কোটি টাকা কিংবা যেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানে ১৬-৫০ জন শ্রমিক কাজ করে।

৩.৩. কোন একটি মানদন্ডের ভিত্তিতে একটি কর্মকান্ড ক্ষুদ্র শিল্পের অন্তর্ভুক্ত হলেও অন্য মানদন্ডে সেটি মাঝারি শিল্পের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে । সেক্ষেত্রে এ কর্মকান্ডটি মাঝারি শিল্পের অন্তর্ভুক্ত বলে বিবেচিত হবে। তবে তৈরী পোশাক প্রতিষ্ঠান/ শ্রমঘন শিল্পের ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য হবে না।

৩.৪. ম্যানুফ্যাকচারিং খাতভুক্ত ক্ষুদ্র শিল্পের একজন গ্রাহককে সর্বোচ্চ ২০ (বিশ) কোটি টাকা এবং সেবা খাতভুক্ত ক্ষুদ্র শিল্পের একজন গ্রাহককে সর্বোচ্চ ৫ (পাঁচ) কোটি টাকা ঋণ প্রদান করা যাবে।

৪.০. মাঝারি শিল্প (Medium Industry):

৪.১. ম্যানুফেকচারিংয়ের ক্ষেত্রে ‘মাঝারি শিল্প’ বলতে সেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে যেসব প্রতিষ্ঠানে জমি এবং কারখানা ভবন ব্যতিরেকে স্থায়ী সম্পদের মূল্য প্রতিস্থাপন ব্যয়সহ ১৫ কোটি টাকার অধিক এবং অনধিক ৫০ কোটি টাকা কিংবা যেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানে ১২১-৩০০ জন শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছে। তবে তৈরী পোষাক প্রতিষ্ঠান/শ্রমঘন শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে মাঝারি শিল্পে শ্রমিকের সংখ্যা হবে সর্বোচ্চ ১০০০ জন।

৪.২. সেবা শিল্পের ক্ষেত্রে ‘মাঝারি শিল্প’ বলতে সেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে যেসব প্রতিষ্ঠানে জমি এবং কারখানা ভবন ব্যতিরেকে স্থায়ী সম্পদের মূল্য প্রতিস্থাপন ব্যয়সহ ২ কোটি টাকা থেকে ৩০ কোটি টাকা পর্যন্ত কিংবা যেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানে ৫১-১২০ জন শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছে।

৪.৩. কোন একটি মানদন্ডের ভিত্তিতে একটি কর্মকান্ড মাঝারি শিল্পের অন্তর্ভুক্ত হলেও অন্য মানদন্ডে সেটি বৃহৎ শিল্পের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। সেক্ষেত্রে এ কর্মকান্ডটি বৃহৎ শিল্পের অন্তর্ভুক্ত বলে বিবেচিত হবে। তবে তৈরী পোশাক প্রতিষ্ঠান/ শ্রমঘন শিল্পের ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য হবে না।

৪.৪. ম্যানুফ্যাকচারিং খাতভুক্ত মাঝারি শিল্পের একজন গ্রাহককে সর্বোচ্চ ৭৫ (পঁচাত্তর) কোটি টাকা এবং সেবা খাতভুক্ত মাঝারি শিল্পের একজন গ্রাহককে সর্বোচ্চ ৫০ (পঞ্চাশ) কোটি টাকা ঋণ প্রদান করা যাবে।

খ. ট্রেডিং/ ব্যবসা খাতঃ

৫.১. ট্রেডিং খাতের ‘মাইক্রো উদ্যোগ’ বলতে সেসব প্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে যেসব প্রতিষ্ঠানে জমি এবং কারখানা ভবন ব্যতিরেকে স্থায়ী সম্পদের মূল্য প্রতিস্থাপন ব্যয়সহ ১০ লক্ষ টাকার নীচে কিংবা যেসব প্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ ১৫ জন শ্রমিক কাজ করে কিংবা যেসব প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক টার্নওভার সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা।

৫.২. ট্রেডিং খাতের ‘ক্ষুদ্র উদ্যোগ’ বলতে সেসব প্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে যেসব প্রতিষ্ঠানে জমি এবং কারখানা ভবন ব্যতিরেকে স্থায়ী সম্পদের মূল্য প্রতিস্থাপন ব্যয়সহ ১০ লক্ষ টাকা থেকে ২ কোটি টাকা কিংবা যেসব প্রতিষ্ঠানে ১৬-৫০ জন শ্রমিক কাজ করে কিংবা যেসব প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক টার্নওভার ১ কোটি টাকার অধিক কিন্তু ১২ কোটি টাকার বেশী নয়।

৫.৩. কোন একটি মানদন্ডের ভিত্তিতে একটি উদ্যোগ/প্রতিষ্ঠান নিম্নতর ধাপের অন্তর্ভুক্ত হলেও অন্য মানদন্ডে সেটি উচ্চতর ধাপের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে । সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট উদ্যোগ/ প্রতিষ্ঠান উচ্চতর ধাপের অন্তর্ভুক্ত বলে বিবেচিত হবে।

৫.৪. অনুচ্ছেদ ৫.১ এবং ৫.২ মোতাবেক সংজ্ঞায়িত ট্রেডিং খাতের ‘মাইক্রো উদ্যোগ’ ও ‘ক্ষুদ্র উদ্যোগ’ ব্যতীত ট্রেডিং খাতের অন্যান্য উদ্যোগ এসএমই অর্থায়ন কার্যক্রমের আওতাভুক্ত বলে বিবেচিত হবে না।

৫.৫. ট্রেডিং খাতের মাইক্রো উদ্যোগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২৫ (পঁচিশ) লক্ষ টাকা এবং ক্ষুদ্র উদ্যোগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫ (পাঁচ) কোটি টাকা ঋণ প্রদান করা যাবে।

৬. এ সার্কুলারের আলোকে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে এসএমই অর্থায়নের তথ্য যথারীতি অত্র বিভাগে দাখিল করতে হবে। একই সাথে, ট্রেডিং খাতের মাইক্রো ক্ষুদ্র এবং অন্যান্য উদ্যোগে বিতরণকৃত মোট ঋণের তথ্য পৃথকভাবে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে অত্র বিভাগে দাখিল করতে হবে।

৭. বিআরপিডি সার্কুলার নং-৭ তারিখ ০৩ নভেম্বর ২০০৪ এর মাধ্যমে জারীকৃত Prudential Regulations for Small Enterprises Financing -2004 এর পার্ট-বি এর রেগুলেশন-৩ এতদ্বারা রহিত করা হলো।

৮. এতদসংক্রান্ত বিষয়াবলী ব্যতিরেকে ৭ জানুয়ারী ২০১৬ তারিখে জারীকৃত এসএমইএসপিডি সার্কুলার নং-০১ (মাস্টার সার্কুলার) এ বর্ণিত অন্যান্য নির্দেশাবলী অপরিবর্তিত থাকবে।

সূত্রঃ বাংলাদেশ ব্যাংক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button