ব্যাংক হিসাব

ব্যাংক একাউন্ট সংশ্লিষ্ট আবগারী শুল্ক বিষয়ে কিছু কথা

“ব্যাংকে ২০ হাজার টাকার বেশি ব্যাংকে জমা দিলে বা তুললে প্রতি লেনদেনে কমপক্ষে ২০০ টাকা আবগারী কর দিতে হবে। “এই কথাটা ১০০% মিথ্যা বা ভুল।

ব্যাংকের চলতি হিসাব বা সঞ্চয়ী হিসাবে টাকা একটি নির্দিষ্ট সীমা (সরকারীভাবে নির্ধারিত) পর্যন্ত গেলেই বছরে একবার নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা আবগারি শুল্ক হিসাবে কাটা হয়। এটি ১৯৪৭ সাল হতে প্রযোজ্য আছে। (আইনটি গুগল করতে পারেন) এবার এর সীমা ও পরিমাণ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি নিয়মিত ভাবে ২/৩ বছর পর পর পরিবর্তন করা হয়। এবারও তাই হয়েছে। সর্বশেষ পরিমাণ নির্ধারণ করা হয় ২০১৫ সালে।

অনেকে অনেক রকম পোস্ট দিয়ে অনেক কিছু বুঝাতে চাইছেন কিন্ত পুরা ব্যপারটা বুঝতে পারেন নাই…তাই কিছু বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে।

এই ব্যপারে সবচেয়ে আলোচিত-সমালোচিত কথা হইল – “ব্যাংকে ২০ হাজার টাকার বেশি ব্যাংকে জমা দিলে বা তুললে প্রতি লেনদেনে কমপক্ষে ২০০ টাকা আবগারী কর দিতে হবে।”

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

এই কথাটা ১০০% মিথ্যা বা ভুল। এই ভুলের শুরু করে কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা এবং কিছু অনলাইন পত্রিকা।

সাধারনত সেভিংস বা কারেন্ট একাউন্টে সরকার মুলত দুই ধরনের শুঙ্ক বা ট্যক্স বা কর কাটে।

প্রথমত, একাউন্টে জমা টাকার প্রাপ্ত লাভের উপর TIN ধারী হলে ১০%, TIN ধারী না হলে ১৫%।

দ্বিতীয়ত হল এক্সাইজ ডিউটি বা আবগারী শুল্ক। এই আবগারী শুল্ক কাটা হয় বছরে একবার হিসাবে। আবগারী শুল্ক বহু আগে থেকেই আপনার একাঊন্ট থেকে কাটা হতো। এই আবগারি শুল্ক আপানর একাঊন্ট থেকে কাটা হয় প্রতি বছরের শেষ দিনে মানে ৩১ ডিসেম্বর বা অনেক ব্যাংকে ১লা জানুয়ারি। আপনাদের একাঊন্ট চেক করলেই পাবেন। এইবার বাজেটে এই শুল্ক এর পরিমান বাড়ান হয়েছে..এটাই সত্য।

এইবার আসেন কি হিসাবে বছরের শেষ দিনে একবারই শুল্ক কাটা হয় তা হিসাব করি।
সারা বছর আপনার লেনদেন ঊপর ভিত্তি করে এই আবগারী শুল্ক কাটা হয়…বর্তমান বাজেটের প্রস্তাবনা মত হিসাবটা এই রকম…
সারা বছর আপনার একাউন্টের ব্যালেনস যদি ১০০০০০ এর নিচে থাকে তাহলে কোন আবগারী শুল্ক দিতে হবে না,
ব্যালেনস যদি ১ লক্ষ টাকা থেকে ১০ লক্ষ টাকার মাঝে থাকে তাহলে ৮০০ টাকা আবগারী শুল্ক দিতে হবে,
এবং ১০ লক্ষ টাকার ঊপর গেলে ২৫০০ টাকা হবে।

এবং এই আবগারী কর বা শুল্ক একবারই, হ্যাঁ “একবারই” এবং “একবারই” কাটা হবে…প্রতি বছর ডিসেম্বর ৩১ তারিখে বা জানুয়ারি ১ তারিখে।

হ্যা আপনার মত ফেসবুক নাগরিককে বলছি এই আবগারী কর বা শুল্ক একবারই কাটা হয়।
এবার বলি এফডিআর ও ডিপিএস এর কথা।

এফডিআর ১/৩/৬/১২ মাস যে মেয়াদেই রাখেন ওই একই হিসাব প্রাপ্ত লাভের উপর TIN ধারী হলে ১০%, TIN ধারী না হলে ১৫%।
আর আবগারী কর বা শুল্ক তাও ঐ একই হিসাব এফডিআর এ টাকার পরিমাণ ১০০০০০ এর নিচে থাকে তাহলে কোন আবগারী শুল্ক দিতে হবে না।

যদি ১ লক্ষ টাকা থেকে ১০ লক্ষ টাকার মাঝে থাকে তাহলে ৮০০ টাকা আবগারী শুল্ক দিতে হবে, এবং ১০ লক্ষ টাকার ঊপর গেলে ২৫০০ টাকা হবে।

৩/৬ মাসের এফডিআর এর হিসাবে একটা ধরা আছে। এফডিআর যদি বছরের মাঝে শুরু হয়ে বছরের মাঝেই শেষ হয় তাহলে আবগারী কর বা শুল্ক একবার দিতে হবে। কিন্তু তা যদি এক বছর শুরু হয়ে পরের বছর শেষ হয় মানে অক্টবরে বা নভেম্বরে শুরু হয়ে পরের বছর জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারিতে শেষ হয় তাহলে দুইবার দিতে হবে…এক বছরের বেশি মেয়াদে এফডিআর করলে বছর প্রতি হিসাব হবে।
ডিপিএস এর বেলায় একই কথা যে মেয়াদেই রাখেন প্রাপ্ত লাভের উপর TIN ধারী হলে ১০%, TIN ধারী না হলে ১৫%। আর আবগারী কর বা শুল্ক বছর প্রতি বছর জমা হওয়া টাকার পরিমানের ঊপর ঐ একই ১লক্ষ টাকার উপরে থাকে তাহলে ৮০০ টাকা ………ব্লা ব্লা ব্লা……এবং ১০ লক্ষ টাকার ঊপর গেলে ২৫০০ টাকা হবে।

অনেক প্রবাসি ভাই দেখি ব্যপক আতংক, টেনশনে আছেন। তাদের বলি আপানাদের পাঠান রেমিটেন্স এ কোন আবগারী কর বা শুল্ক নাই। যত খুশি টাকা পাঠান। হুন্ডি বা বিকাশে বা মোবাইল ব্যাংকিয়ে পা্ঠবেন না। ব্যাংকিং চ্যনেলে বা মানি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে পাঠান। বিদেশ থেকে টাকা পাঠানর জন্য যে ফি দিতে হয় তা সরকার ভর্তুকি দিবে এমন একটা প্রস্তাবনা এবারের বাজেটে দেয়া হয়েছে। পাশ হলেই কোন ফি দিতে হবে না দেশে টাকা পাঠাতে। আরেকটা কথা প্রবাসি ভাই-আপা দের বলি আপানাদের পরিবারকে বইলেন আপনাদের কষ্ট আর্জিত টাকা যেন তারা কোন কাজে লাগায় বা বিনিয়োগ করে যেখান থেকে আয় আসবে……শপিং, বিলাসিতা বা নতুন নতুন মোবাইল সেট কিনতে যেন ব্যয় না করে।

আশা করি অনেকের ভুল ধারনা কাটবে এবার।

(Collected from Online)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button